বিশেষ প্রতিবেদক,দৈনিক নাসা নিউজ।গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে দাম্পত্য কলহের জেরে শারমিন আক্তার (২৮) নামে এক গৃহবধূর মুখে গরম রডের ছ্যাঁকা ও কাঁচি দিয়ে পায়ের রগ কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্বামী আলমগীর হোসেনের (৩৫) বিরুদ্ধে। ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছেন আলমগীর।গতকাল সোমবার ১০ ই নভেম্বর রাতে গুরুতর আহত শারমিনকে সাদুল্লাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিছানায় যন্ত্রণায় কাতরাতে দেখা যায়।এর আগে একই দিন সকাল ১০টার দিকে উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের ছোট দাউদপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।পরে রক্তাক্ত ও অচেতন অবস্থায় স্থানীয় গ্রাম পুলিশ ও প্রতিবেশীরা শারমিনকে উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।তবে দিনভর ঘটনাটি গোপন থাকলেও সোমবার রাতে ভুক্তভোগী গৃহবধূর মা সুফিয়া বেগম থানায় লিখিত অভিযোগ করলে বিষয়টি সাংবাদিকদের নজরে আসে।দুই সন্তানের জননী শারমিন আক্তার একই গ্রামের আলমগীর হোসেনের স্ত্রী।আলমগীর হোসেন সাদা মিয়ার ছেলে এবং পেশায় হাটে ছাগল কেনাবেচা করেন।পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়রা জানান প্রায় চার বছর আগে একই উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের তাহেরপুর গ্রামের মৃত শহিদুল ইসলাম বকুর মেয়ে শারমিন আক্তারকে পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন আলমগীর।বিয়ের পর থেকেই সামান্য কথা কাটাকাটিতেই স্ত্রীকে নির্যাতন করতেন তিনি।গতকাল সোমবার সকালে কথা কাটাকাটির জেরে আলমগীর প্রথমে লোহার রড আগুনে গরম করে স্ত্রীর মুখমণ্ডলসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছ্যাঁকা দেন।এরপর কাঁচি দিয়ে শারমিনের বাম পায়ের রগ কেটে দেন।এতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে শারমিন অচেতন হয়ে পড়েন।হাসপাতালে শারমিনের পাশে থাকা তার মা সুফিয়া বেগম বলেন বিয়ের পর থেকেই মেয়েকে নির্যাতন করে আসছে আলমগীর।আজকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে এমন নৃশংস নির্যাতন করেছে। আমরা থানায় মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।তিনি আরও জানান সংসারে স্ত্রী-সন্তানের দেখভাল করে না আলমগীর। নির্যাতনের পর মেয়েকে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। পরে প্রতিবেশী ও গ্রাম পুলিশের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে আনি।সাদুল্লাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডাঃ নুপুর বলেন রোগীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর ক্ষত রয়েছে।বিশেষ করে পায়ের রগ কাটার কারণে তিনি অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে শকের মধ্যে রয়েছেন।তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।এ বিষয়ে সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজ উদ্দিন খন্দকার বলেন ঘটনাটি জানার পরেই হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।রাতে ঐ নারীর মা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।এদিকে শারমিনকে নির্যাতনের ঘটনা জানাজানি হলে এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়দের ভাষ্য-স্বামীর সংসারে থেকেই দুই সন্তানসহ বিভিন্ন কষ্ট সয়ে আসছিলেন শারমিন।তাদের দাবি,অভিযুক্ত আলমগীরকে দ্রুত গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হোক।