চালের দাম পাইকারি পর্যায়ে কমলেও খুচরা বাজারে সেভাবে কমেনি
বিশেষ প্রতিনিধি,দৈনিক নাসা নিউজ।দেশীয় বাজারে কমতে শুরু করেছে সকল প্রকার চালের দাম।এরই মধ্যে রাজধানী ঢাকার বাজারগুলোতে পাইকারি পর্যায়ে প্রায় সকল প্রকার চালের দাম বস্তা প্রতি সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা পর্যন্ত কমেছে।আমদানির প্রভাবে চালের দামে ঊর্ধ্বমুখী গতি দিক বদলে নিম্নগামী হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।তবে খুচরা পর্যায়ে চালের দাম এখনো কমেনি বলে দাবি করেছেন ভোক্তারা।রাজধানী ঢাকার শ্যামবাজার,সূত্রাপুর ও নিউমার্কেট বাজার ঘুরে দেখা গেছে 'মিনিকেট' হিসেবে পরিচিত সিদ্ধ চাল বিক্রি হচ্ছে বস্তা প্রতি ২ হাজার ৮০০ টাকায়,যা আগে ছিল ২ হাজার ৯০০ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকায়।গত সপ্তাহে ২ হাজার ৯০০ টাকায় বিক্রি হওয়া পাইজাম চাল বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৭০০ টাকায়।কাটারিভোগ চাল গত সপ্তাহে ১ হাজার ৯০০ থেকে ২ হাজার টাকা প্রতি বস্তা বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে তা কমে এসেছে ১ হাজার ৭০০ টাকায়।এ ছাড়া নাজিরশাইল চাল ২ হাজার টাকা প্রতি বস্তায় বিক্রি হচ্ছে,যা গত সপ্তাহে ছিল ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৩০০ টাকা। স্বর্ণা চাল ২ হাজার ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ হিসাবে সপ্তাহের ব্যবধানে মানভেদে প্রতি বস্তা চাল ২০০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত কমেছে।সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্যমতে,এক মাসের ব্যবধানে সরু চালের দাম ১ দশমিক ৮৫ শতাংশ এবং মাঝারি মানের চালের দাম ৩ দশমিক ৭২ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে।খাদ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী ২০২৪-২৫ ইং অর্থ বছরে দেশে মোট চাল আমদানি হয়েছে ১৩ লাখ টন।এর মধ্যে সরকারিভাবে ৮ লাখ ৩৫ হাজার টন এবং বেসরকারিভাবে প্রায় ৪ লাখ ৭০ হাজার টন আমদানি হয়েছে।সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায় সরকারিভাবে আমদানি হওয়া চালের মধ্যে ৬ লাখ টন ভারত থেকে,১ লাখ টন মিয়ানমার থেকে,১ লাখ টন ভিয়েতনাম থেকে এবং বাকিগুলো পাকিস্তান থেকে এসেছে।বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকার নতুন করে ভারত থেকে আরও ৫০ হাজার টন চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে।একই সাথে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২ লাখ ২০ হাজার টন গম আমদানি করা হবে,যেখানে প্রতি টনের দাম হবে ৩০৮ ডলার।চাল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে বিপুল পরিমাণ চাল আমদানির কারণে বাজারে সরবরাহ বেড়েছে,আর সরবরাহ বাড়ায় কমতে শুরু করেছে চালের দাম। সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলে এ দাম আরও কমে আসবে।রাজধানীর শ্যামবাজারে চাল কিনতে আসা নিলয় আহমেদ নামে এক ক্রেতা বলেন 'চালের দাম পাইকারি পর্যায়ে কমলেও খুচরা বাজারে সেভাবে কমেনি।তবে যেহেতু পাইকারি পর্যায়ে কমেছে,তাই আশা করা যায় আগামী সপ্তাহে খুচরা পর্যায়েও কমে আসবে।এ জন্য তদারকি সংস্থার নজরদারি আরও বাড়ানো দরকার।রাজধানীর সূত্রাপুর বাজারের চাল ব্যবসায়ী শেখ মোঃ জহির বলেন বাজারে প্রচুর ভারতীয় চাল এসেছে।এ কারণে দাম কমছে।দেশীয় চালেরও পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে।আগামী ২ মাসে আমন ধান উঠলে সরবরাহ আরও বাড়বে আর দাম আরও কমে যাবে।দাম কম থাকলে আমাদের ব্যবসা ভালো হয়।আর দাম বেশি থাকলে সাধারণ মানুষ কেনাকাটা কম করে, বিক্রিও কম হয়।এদিকে চট্টগ্রাম রাইস মিল মালিক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোহাম্মদ হোসেন বলেন "ভারতীয় চালের প্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশীয় চালের চাহিদা কিছুটা কমেছে। আগে বাজার নিয়ন্ত্রণ করত বড় গ্রুপ, এখন যে কেউ চাল আমদানি করতে পারছে,ফলে প্রতিযোগিতা তৈরি হয়েছে এবং দাম কমেছে।