হবিগঞ্জের আলোচিত ৯ মার্ডার মামলার পলাতক আসামী ইউপি চেয়ারম্যান মঞ্জু কুমার দাস গ্রেফতার
আকিকুর রহমান রুমন,হবিগঞ্জ। হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে আলোচিত ৯ মার্ডার মামলার আলোচিত পলাতক আসামী আওয়ামীলীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান মঞ্জু কুমার দাসকে নিজ এলাকা দুপুরের দিকে আটক করেন থানা পুলিশ।যদিও থানা পুলিশের পক্ষ হতে আটক কিংবা গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেননি পুলিশ।এর পূর্বেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম"ফেইসবুকে" ছোট্ট একটি মিশুক গাড়িতে করে পুলিশ চেয়ারম্যান মঞ্জু কুমার দাসকে নিয়ে যাওয়ার ছবি মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে গ্রেফতার হওয়ার শিরোনামে।পোস্টকারীদের মধ্যে সংবাদকর্মী,বিএনপি নেতাকর্মী,বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া আহত ও নিহতদের পরিবারের সদস্যগন থানা পুলিশ প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়ে শত,শত পোস্ট করেন।অন্য দিকে এই মিথ্যা মামলার পলাতক থাকা আাসামীগন ও এই মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে থাকা আওয়ামীলীগ নেতাকর্মী ও জনপ্রতিনিধিদের আত্মীয় স্বজনগন দেশ-বিদেশ থেকে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে পোস্ট করে যাচ্ছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে।মিথ্যা মামলায় আ'লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান মঞ্জু কুমার দাসকে গ্রেফতার করায় দেশ বিদেশ থেকে নিন্দা ও প্রতিবাদ করে যাচ্ছেন দেশ-বিদেশে অবস্থানরত পলাতক থাকা আ'লীগ নেতাকর্মীগন।চেয়ারম্যান মঞ্জু কুমার দাসের ছবি ও .আটক,গ্রেফতারের বিষয়টি ভাইরাল হয়ে পড়ে।এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায় আজ ২রা নভেম্বর রবিবার দুপুরে একদল পুলিশ বানিয়াচংয়ের আলোচিত ৯ মার্ডার মামলার পলাতক আসামী আওয়ামীলীগ নেতা ও ৫নং দৌলতপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মঞ্জু কুমার দাসকে নিজ এলাকা থেকে দুপুরে আটক করেন।পরে তারা ছোট্ট একটি মিশুক গাড়ি যোগে আটককৃত চেয়ারম্যানকে নিয়ে মার্কুলি পুলিশ ফাঁড়ির এদিকে নিয়ে যান বলে জানান।এ ব্যাপারে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)মিজানুর রহমান ও সেকেন্ড অফিসার (এসআই) আমিনুল ইসলাম এর সাথে মুঠোফোন নাম্বারে যোগাযোগ করেও কোন সাড়া মেলেনি।পরে তাদেরকে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে মেসেজ দিয়ে রাখা হলেও এরিপোর্ট লেখা কালীন সময় বেলা পৌনে পাঁচটার দিকে থানা পুলিশের পক্ষ হতে কোন জবাব দেওয়া হয়নি।সন্ধ্যার দিকে ৫নং দৌলতপুর ইউনিয়ন এর বিট পুলিশের ইনচার্জ(এসআই)জিয়াউর রহমান তার নিজস্ব ফেরিফাইড ফেইসবুক আইডি থেকে পুলিশ সদস্যদের নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান ও ৯ মার্ডার মামলার পলাতক আসামী মঞ্জু কুমার দাসকে গ্রেফতার করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন ৩টি ছবি পোস্ট করার মধ্যে দিয়ে।উল্লেখ্য গত বছরের ৫ ই আগষ্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীর ও থানা পুলিশের মধ্যে এক ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।পুলিশের গুলিতে ৮জন নিহত ও শতাধিক এর উপরে আন্দোলনে অংশ নেওয়া লোকজন আহত হন।এদিকে আন্দোলনকারীদের হামলায় এক সাংবাদিক ও এক পুলিশ সদস্য সহ ২জনের প্রানহানীর ঘটে।এছাড়াও আন্দোলনকারীগন থানা ঘেরাও করে আগুন ধরিয়ে দিয়ে সরকারি সবকিছু জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ধ্বংস করে ফেলেন।থানার সকল পুলিশ সদস্যদের অবরুদ্ধ করে রাখেন ১৩ ঘন্টা।লুটপাট করা হয় থানায় থাকা নগদ টাকা পয়সা,পুলিশের গুলাবারুদ ও আগ্নেয়াস্ত্র সহ তাদের সকল ব্যবহারের জিনিস পত্র।১৩ ঘন্টা পর সেনাবাহিনী অবরুদ্ধ সকল পুলিশ সদস্যকে উদ্ধার করলেও একজন পুলিশ সদস্য(এসআই) সন্তুশ দাস চৌধুরীকে উদ্ধার করতে পারেননি সেনাবাহিনী।রাত আনুমানিক ২টার দিকে তাদের সামনেই থানার ভিতরে পিটিয়ে হত্যা করে গাছের সাথে ঝুলিয়ে রাখেন আন্দোলনকারীগন।ঘটনার ১৬দিন পর নিহত এক শিশুর পিতা বাদী হয়ে ৯জন হত্যাকান্ডের সত্য একটি ঘটনায় ১৬০ জনকে নামীয় আসামি করে এবং অঞ্জাত ৩০০ জনকে আসামী দিয়ে ৪৬০ জনকে ঘটনার সাথে অভিযুক্ত করে একটি মিথ্যা মামলা করেন।নামীয় আসামীদের মধ্যে আ'লীগ মনোনীত বানিয়াচং আজমিরীগঞ্জ সদস্য এ্যাডভোকেট ময়েজউদ্দিন শরিফ রুয়েলকে হুকুম দায়ী আসামী করে সাবেক এই আসনের সংসদ সদস্য এডভোকেট আব্দুল মজিদ খানসহ, দুইজন উপজেলা চেয়ারম্যান,কয়েকটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান,মেম্বার ও আওয়ামীলীগ পরিবারের সকল ইউনিট এর নেতাকর্মী ও সাংবাদিককে নামীয় আসামি করা হয়।এই মামলার পূর্বেই আসামীরা বানিয়াচং ছেড়ে সবাই আত্মগোপনে চলে যান।বর্তমানে ১৪ মাসের উপরে চলে সংসদ সদস্য এডভোকেট ময়েজউদ্দিন শরিফ রুয়েল সহ দুই,উপজেলা চেয়ারম্যান,বেশ কয়েকজন ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতাকর্মী ও অঙ্গ সংগঠন এর নেতাকর্মীগন পলাতক রয়েছেন।এর মধ্যে সাবেক সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ খান,ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আহাদ মিয়া,ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আনোয়ার মিয়া,ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগ সভাপতি রেখাছ মিয়া,আ'লীগ সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি শাহজাহান মিয়া,আওয়ামীলীগ নেতা আহমদ লস্কর,আরজু মিয়া,সমশর আলী মেম্বার,সাবেক উপজেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক জাসিদুল মিয়া,যুবলীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মিয়া,জনাব কলেজের সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি রাশেদ মিয়া সহ আরও অনেক নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়ে কারাগারে রয়েছেন।এছাড়াও তুহিন মাস্টার এবং সাংবাদিক রায়হান উদ্দিন সুমনকে এই মামলার নামীয় আসামী হিসাবে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।বর্তমানে গ্রেফতারকৃত আসামীগন বছর খানেক ধরে কারাভোগ করে আসছেন।